শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে চাঞ্চল্যকর শাহজাহান হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকান্ডের মূল হোতাসহ ৩ আসামীকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। রোববার ধৃত আসামীদের সুনামগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, উপজেলার দিঘলবাক কালাইনজোড়া গ্রামের মৃত ইউনুছ উল্লার ছেলে আল আমিন ওরফে লিটন (৩৬), উত্তর কালনীরচর গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে সুহিন মিয়া (৩৫) এবং দিঘলবাক কালাইনজোড়া গ্রামের মৃত আবরুজ উল্লার ছেলে ফুরুক মিয়া (৫৬)।
জানাগেছে, গত ২২ মে জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দিঘলবাক (আটঘর) গ্রামের মৃত মদরিছ আলীর ছেলে শাহজাহান আলী (৩২) নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় শাহজাহান আলীর বড় ভাই আবদুল সামাদ বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন। এদিকে-থানায় দায়েরকৃত সাধারণ ডায়রীর আলোকে জগন্নাথপুর থানার এসআই আতিকুল আলম খন্দকার প্রযুক্তিগত সহায়তায় নিখোঁজ শাহজাহান আলীকে উদ্ধার তৎপরতা চালান। পরে শাহজাহান আলীকে অপহরণের প্রমাণ পাওয়া গেলে থানায় মামলা দায়ের হয়। এরপর সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ খানের নির্দেশে এবং সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) মাহবুবুর রহমানের তত্বাবধানে, জগন্নাথপুর থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী ও ওসি (তদন্ত) আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই আতিকুল আলম খন্দকারসহ পুলিশ দল শাহজাহান আলী অপহরণের ঘটনায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানের এক পর্যায়ে ১৩ জুলাই ঘটনায় জড়িত আসামী আল আমিন ওরফে লিটন ও সুহিন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তারা শাহজাহান আলীকে অপহরন ও হত্যাকান্ডের সত্যতা স্বীকার করে। তাদের দেয়া তথ্যে জানা যায়, শাহজাহান আলীর সাথে আসামী লিটনের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। সেই সাথে গরু বেচাকেনা সহ পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার বোন জামাই দিঘলবাক গ্রামের মৃত আবরুজ মিয়ার ছেলে ফুরুক মিয়ার সাথেও বিরোধ ছিল। উক্ত বিরোধের জের ধরে লিটন ও ফুরুক মিয়া শাহজাহান আলীকে খুন করার পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২২ মে রাতে শাহজাহান আলীকে স্থানীয় কালাইনজোড়া বাজারে ডেকে নেয়া হয় এবং পরে ইঞ্জিন নৌকা দিয়ে উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের রৌয়াইল গ্রামে লিটনের নানা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। অবশেষে হতভাগ্য শাহজাহান আলীকে চায়ের সাথে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে রশি দিয়ে গলায় শ্বাস রোধ করে হত্যা করে লাশটি পার্শ¦বর্তী কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। আসামী লিটন ও সুহিনের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে অপর আসামী ফরুখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের ১৫ জুলাই রোববার সুনামগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জগন্নাথপুর থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, কুশিয়ারা নদী থেকে হতভাগ্য শাহজাহান আলীর মৃতদেহ উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply